শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:২৪ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
ইনানী সৈকতে গোসলে নেমে পর্যটকের মৃত্যু নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ ও নিরাপদ পর্যটনের জন্য ‘সমুদ্র সন্ধ্যা’ রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে জি থ্রি রাইফেল সহ আরসা কমান্ডার আটক টেকনাফের পাহাড়ে জেল ফেরত যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার টেকনাফে ৭ লাখ টাকা মালামাল নিলামে সর্বোচ্চ ডাককারি স্থল বন্দরের বিশিষ্ট আমদানি ও রপ্তানি কারক সিআইপি ওমর ফারুক টেকনাফের নিকটবর্তী মিয়ানমারের ‘লালদিয়া’ নিয়ন্ত্রণে তীব্র সংঘাত : গুলি আসছে স্থলবন্দর ও আশে-পাশের এলাকায় কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার রামুতে বড় ভাই হত্যা মামলায় ছোট্ট ভাই গ্রেপ্তার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিদেশি পিস্তল ও গুলিসহ এক রোহিঙ্গা আটক সৈকতে নারী হেনস্তাকারি ফারুকুলের এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর

মিয়ানমারের সংঘাত : মুর্হুমুহু গোলাগুলি স্থল ও আকাশে

বিশেষ প্রতিবেদক : মিয়ানমারে চলমান সংঘাত যেন থামছে না। কি স্থল কি আকাশপথ সমানতালে চলছে গোলাগুলি। হেলিকপ্টার থেকে করা হচ্ছে গুলি আবার হেলিকপ্টার লক্ষ্য করে করা হচ্ছে গুলি। একই সঙ্গে মর্টার শেলের বিকট শব্দে কাঁপছে ঘুমধুম, উখিয়া ও টেকনাফ সীমান্ত এলাকা। এ পরিস্থিতিতে সময়ে-সময়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে জনবসতিও এসে পড়ছে গুলি ও মর্টার শেল। যে মর্টার শেলের আঘাতে এক নারী সহ ২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

সোমবার দুপুর আড়াই টার দিকে মিয়ানমার থেকে ছোঁড়া একটি মর্টার সেল ঘুমধুম সীমান্তের জলপাইতলি এলাকায় এসে পড়েছে। এতে এক নারী সহ ২ জন নিহত হন।

বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন ২ জন নিহত হওয়ার সত্যতা স্বীকার করেছেন। তবে তিনি বিস্তারিত বলতে পারেননি।

ঘুমধুম পুলিশ ফাঁড়ি তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক (আইসি) মাহাফুজ ইমতিয়াজ ভুঁইয়া জানিয়েছেন, বিষয়টি তিনি শুনেছেন।

স্থানীয় চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আজিজ জানিয়েছেন, মিয়ানমারের ওপার থেকে আসা মর্টার সেলের আঘাতে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এক বৃদ্ধ, তার নাম জানা যায়নি। তিনি একজন রোহিঙ্গা। অপরজন স্থানীয় বাদশা মিয়ার স্ত্রী হোসনে আরা (৫৫)।

ঘুমধুম সীমান্তের বাসিন্দা মুজিবুর রহমান বলেন, বেলা ১২ টায় মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার এসে তুমব্রু রাইট বিওপি ও ঢেকুবুনিয়া ব্যাটালিয়ন এলাকায় মর্হুুমুহু গুলিবর্ষণ করছে। যা চলে ঘন্টাব্যাপি। আমরা সীমান্তের বাসিন্দারা চরম আতংকে রয়েছি।

ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য দিল মোহাম্মদ ভূট্টো বলেন, তুমব্রু সীমান্তের তুমব্রু রাইট বিওপি নাকি বিদ্রোহী গোষ্ঠী দখলে নিয়েছে শুনেছি। পতাকাও টাঙ্গিয়ে দিয়েছে। এখন বিদ্রোহীরা ঢেকুবুনিয়া ব্যাটালিয়ন দখলে নিতে ব্যাপক গোলাগুলি হচ্ছে। মিয়ানমারের ছোঁড়া গুলিতে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশি ৫ নাগরিক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

কক্সবাজারের উখিয়ার পালংখালী ও টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং, হ্নীলা ও সাবরাং এলাকার ওই পাড়ে মিয়ানমারের সীমান্তেও থেমে থেমে মর্টার ও গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। পালংখালী ও হোয়াইক্যং, হ্নীলা ও সাবরাং ইউনিয়নের নাফনদীর বিপরীতে মিয়ানমার সীমান্ত।

রোববার রাত ১০টা থেকে সোমবার বিকাল পর্যন্ত সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইনে মর্টার শেল নিক্ষেপ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।

উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন, হোযাইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর আহমদ আনোয়ারী, হ্নীলার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী ও সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের ৯নং ওযার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জনপ্রতিনিধিরা বলেন, রোববার রাত ১০টা থেকে সোমবার বিকাল পর্যন্ত সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইনে মর্টার শেল নিক্ষেপ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে।

পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন বলেন, বালুখালী, পালংখালী ও আনজুমানপাড়ার বিপরীতে ঢেঁকিবনিয়া এলাকায় রাত থেকে এ পর্যন্ত থেমে থেমে প্রচুর গোলাগুলি হয়েছে। তবে সীমান্তে কয়েক শতাধিক লোকজন জড়ো হতে দেখা গেছে।

হোয়াইক্যং উলুবনিয়ার বাসিন্দা জালাল আহমদ বলেন, থেমে থেকে গোলাগুলিতে ঘুমানো যাচ্ছে না। গোলাগুলির কারণে ঘর থেমে অপযোজনে নারী, পুরুষ ও শিশুরা বাহির হচ্ছে না। মানুষের মনে শুধু আতঙ্ক।

হ্নীলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৯নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোহাম্মদ আলী বলেন, রোববার রাত থেকে বিপরীতে মিয়ানমারের জামবনিয়া, রাইম্মবিল, পেরান্তপুরু ও কাইনবন্যা এলাকায় থেমে থেমে মর্টার শেল নিক্ষেপ ও গোলাগুলি হয়েছে। স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছি, মিয়ানমারের সীমান্তে অধশতাধিক মর্টার শেল ও কয়েক হাজারের বেশি গুলি ছোড়া হয়েছে।

সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের ৯নং ওযার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম বলেন, শাহপরীর দ্বীপের বিপরীতে রাখাইন রাষ্ট্র গেদুছড়া ও মেগিচং এলাকায় রাত থেকে থেমে থেমে গোলাগুলি ও মটার শেলে শব্দে কেঁপে উঠছে।

টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, মিয়ানমারের বিভিন্ন সীমান্তে মর্টার ও গুলির শব্দ ভেসে আসছে এ পারে। এটি তাদের দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা। তবে টেকনাফ সীমান্তে কড়া নজরদারি পাশাপাশি বিজিবির টহল জোরদার করা হযেছে। সীমান্ত অতিক্রম কাউকে অনুপ্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অবহিত আছে। সীমান্তে বিজিবি ও কোস্টগাডদের টহল জোরদার ও নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি সীমান্তে বসবাসকারীদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

.coxsbazartimes.com

Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themesbcox1716222888